একজন মহান শিক্ষকের প্রতি একজন মহান ছাত্রের সম্মান প্রদর্শন।
১৯৯৪ সালে ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মাননীয় শঙ্কর দয়াল শর্মা তাঁর বিদেশ যাত্রায় ওমানে গিয়েছিলেন। সেইদিন এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান যখন বিমানবন্দরে অবতরণ করল তখন তিনটে অত্যন্ত চমকপ্রদ ঘটনা ঘটেছিল।
একজন মহান শিক্ষকের প্রতি একজন মহান ছাত্রের সম্মান প্রদর্শন।
১৯৯৪ সালে ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মাননীয় শঙ্কর দয়াল শর্মা তাঁর বিদেশ যাত্রায় ওমানে গিয়েছিলেন। সেইদিন এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান যখন বিমানবন্দরে অবতরণ করল তখন তিনটে অত্যন্ত চমকপ্রদ ঘটনা ঘটেছিল।
যেন নাম থেকেই আন্দাজ করা যায় কেমন হতে পারে কিনু গোয়ালার গলি। বোবা বোবা চেহারার বাড়ি। ছোট ছোট ফোকরচোখ জানালা আর চুন খসা খিলানের হাঁ। আলো যেখানে পালাই পালাই করে, দেয়ালে মাঝে মাঝে স্যাঁতা পড়া দাগ। হারিয়ে যাওয়া অতীতের কথা স্মরণ করে দীর্ঘশ্বাস ছাড়া নিতান্ত অসহায়ের মত এই গলির মানুষগুলোরও একেকতা অতীত রয়েছে। যেমন রয়েছে নীলাদেরও। একসময়ে প্রাচুর্য্যে ভরা ছিল তাদেরও জীবন। ক্রমে ক্রমে দারিদ্রতার চরম কষাঘাতে জর্জরিত হতে হতে আজ এই গলিতে ঠাই হয়েছে তাদের।
আমার বই ডট কমে একটা তালিকায় বইটা পেয়ে পড়া শুরু করেছিলাম। যদিও শিবরাম চক্রবর্তীর এই বইটির নাম আগেও শুনেছিলাম। কাঞ্চন নামে এক কিশোর তাদের পুরুতের সমবয়সী ছেলে বিনোদের সাথে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে সে বিনোদের দইয়ের ভাড় কেড়ে নিয়ে তার মাথায় ঢেলে দেয় এবং ক্ষীরের বাটি কেড়ে নেয়। ফলাফল, কিছুক্ষণ বাদেই বাড়ির চাকর এসে খবর দেয় বাবা তার জন্য চাবুক হাতে অপেক্ষা করছে।
ইংরেজিতে এমএ শেষ করেও কোন চাকরী যোগাড় করতে পারিনী জয়দীপ। কোলকাতায় কোথাও থাকার জায়গা নেই। বাধ্য হয়ে পরিচিত একজনের অফিসে চুরি করে রাতে বেলায় ঢুকে রাত্রিযাপন করে সে। আপতদৃষ্টিতে বৈচিত্রহীন এবং অনিশ্চিত এক জীবন কাটানো এই জয়দীপের জীবনে হঠাৎ করেই দু’জন নারীর আবির্ভাব ঘটে। কেমন যেন নিস্তব্ধভাবে শুরু হওয়া উপন্যাসটি হঠাৎ করেই হয়ে ওঠে একটি থ্রিলার। এমন হঠাৎ করেই বিচিত্রসব ঘটনার ঘনঘটায় মনে হয় আমি যেন সমারেশ মজুমদারের কোন লেখা পড়ছি না বরং সস্তা কোন লেখকের লেখা কোন চলচিত্রের চিত্রনাট্য পড়ছি। অবশ্য এটা খুব সাময়িক সময়ের জন্যই মনে হয়েছিল কিন্তু শেষ দিকে দিয়ে আবারো উপলব্দি হলো গল্পের এমন ঘন ঘন বাঁক পরিবর্তন, এমন সাবলিলভাবে উপস্থাপন কোন সস্তা লেখকের পক্ষে সম্ভব ছিলো না। আর গল্পের শুরুটা যে একেবারে নিস্তব্ধভাবে হয়েছে সেটাও বলাটা মনে হয় ঠিক হলো না। শুরুতেই অযাচিতভাবে একটা গুন্ডা প্রকৃতির মানুষের সাথে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার ঘটনাটি বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় জয়দীপের চরিত্রে আসলেই ভিতরে ভিতরে একটা প্রতিবাদী সত্তা ছিলো।
ছবিতে যাকে দেখতে পাচ্ছেন তাকে চেনেন না এমন মানুষ খুজে পাওয়া কঠিন। গুগল তাকে American Business Magnate বলে পরিচয় করিয়ে দেয়। তিনি ১৯৯৫ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৯ বছর পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হিসাবে পরিচিত ছিলেন (২০১০-২০১৩ ছাড়া)। তিনি মাইক্রোসফটেরও প্রতিষ্ঠাতা। চাইলে তিনি আজও বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির তালিকায় প্রথম থাকতে পারতেন। কিন্তু তিনি এত বেশি পরিমাণ দান করেন যা একজন মানুষ কল্পনাও করতে পারবেন না। ২০২২ সালেও তিনি আমেরিকার স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে ৫ মিলিয়ন ডলার (!!!) দান করেছেন।
গঙ্গাবতী নামের নদীর তীরঘেষে গড়ে ওঠা এক প্রাচীন জমিদারবাড়ি গঙ্গামহল যার নাম। চারখানা দ্বিতল অট্টালিকা নিয়ে গড়ে ওঠা এই মহলে থাকেন জমিদার বিষ্ণুনারায়ণ ও তার তিন পুত্র। প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী জেষ্ঠপুত্র অবনীন্দ্রনারায়ণ পরবর্তী জমিদার হওয়ার কথা থাকলেও সকলের ধারণা জমিদার হিসেবে তিনি উপযুক্ত নয়। কেননা তিনি অত্যন্ত ভাবপ্রবণ এবং খেয়ায়ী একজন মানুষ বরং দ্বিতীয় পুত্র দেবেন্দ্রনারায়ণের মধ্যে রয়েছে জমিদার হওয়ার মত সকল গুণাবলী। দেবেন্দ্রনারায়ণ গঙ্গামহল থেকে কয়েক ক্রোশ দূরে বারোহাটির জঙ্গলের কোল ঘেষে গড়ে তুলেছেন নিজস্ব এক মহল, বারোহাটি বাগানবাড়ি যার নাম। সকল প্রকার ভোগ-বিলাসের আয়োজন রয়েছে এই মহলে।
অশ্বথামা
অস্ত্রগুরু দ্রোণ এর পুত্র। তার মাতার নাম কৃপী। জন্মের সময় অশ্বের মত শব্দ করেছিলেন বলে তার এইরূপ নামকরণ করা হয়। তবে কুরুক্ষেত্রর যুদ্ধে ব্যবহৃত একটি সামরিক হাতির নামও অশ্বত্থামা ছিল। পরিকল্পিতভাবে ভীম হাতিটিকে হত্যা করার পর, সেই সংবাদ যুধিষ্ঠির গুরু দ্রোণকে বলা হলে তিনি ধর্মপুত্রের কথা বিশ্বাস করেন এবং অস্ত্র পরিত্যাগ করেন। এ সময় দ্রৌপদীর ভাই ধৃষ্টদ্যুম্ন দ্রোণাচার্য্যের শিরোচ্ছেদ করেন।
ঋষি গৌতমের স্ত্রী। ব্রহ্মা এক পরমাসুন্দরী নারী সৃষ্টির মানসে অন্যান্য জীবের শ্রেষ্ঠ অঙ্গসমূহ নিয়ে অহল্যাকে সৃষ্টি করেছিলেন। দেবরাজ ইন্দ্র তাঁর সতীত্ব হরণ করেন, ব্যভিচারের অপরাধে ঋষি গৌতম তাঁকে অভিশাপ দেন এবং পরবর্তীতে বিষ্ণুর অবতার রাম এসে তাঁকে শাপমুক্ত করেন।
বাঙ্গালির
খাদ্য তালিকায় বিশেষ করে নাস্তায় সিঙ্গাড়া একটি অতি পরিচিত নাম। কিন্তু আমরা ক’জন জানি
এই অসাধারণ খাদ্যবস্তুটির জন্ম বৃত্তান্ত? ইন্টারনেটে সিঙ্গাড়া তৈরি বা সিঙ্গাড়া আবিষ্কার
সম্পর্কে বেশকিছু মজার কাহিনী ছড়িয়ে আছে। এর মধ্যে যেটি সবচেয়ে জনপ্রিয় মতবাদ সেটি
হল:
অনেক অনেককাল আগের কথা, সুবিচার নামে
এক দেশ ছিল আর সেই দেশের রাজার নাম ছিল সুশাসক। একবার সেই দেশের এক গৃহস্থের বাড়িতে
চুরি হল। চোর শাবল দিয়ে মাটির দেয়াল ফুটো করে ঘরে ঢুকে সকল মালামাল নিয়ে পালিয়ে গেলো।
বাড়ির মালিক রাজ দরবারে গিয়ে বিচার চাইলেন। সবশুনে রাজা তার এক মন্ত্রীকে পাঠালেন বিষয়টি
তদন্ত করে দেখার জন্য। মন্ত্রী চুরি যাওয়া বাড়িতে গেলেন, সব দেখলেন তারপর বাড়ির মালিকের
কাছে কিছু উৎকোচ দাবী করলেন। ঘর থেকে সব চুরি যাওয়ায় মাড়ির মালিকের কাছে আর কোন অর্থ
ছিল না। এ কথা মন্ত্রী মশাইকে জানাতেই তিনি ভীষণ ক্ষেপে গেলেন এবং রাজার কাছে গিয়ে
জানালেন, “মহারাজ, সব দোষ এই বাড়ির মালিকের। বাড়ির মালিক রাতে যথেষ্ঠ সতর্ক ছিল না,
বাড়ির দেওয়ালও জরাজীর্ণ, মজবুত না। এই বাড়ি দেশের জন্য হুমকি স্বরূপ। চোর যখন দেয়াল
ফুটো করে চুরি করছিল তখন ঐ জরাজীর্ণ দেয়াল ভেঙ্গে পড়ে চোরের মৃত্যুর সম্ভাবনা ছিল তাই
প্রথমে বাড়ির মালিকের বিচার হওয়া উচিৎ।”
“ইন্দুবালা ভাতের
হোটেল”নামে একটা বইয়ের
কভার পেজের ছবি ফেসবুকের কল্যাণে চোখে পড়ছিল
বেশ কিছুদিন হল। লেখকের নাম কল্লোল লাহিড়ী। খানিকটা তাচ্ছিল্যের সাথে মনে হয়েছিল কোথাকার
কোন লাহিড়ী, সখ হয়েছে বিভূতিভূষণ হওয়ার। তবু গুগলে সার্চ দিতেই বইটার পিডিএফ ভার্ষণ
পেয়ে গেলাম। পড়ব পড়ব করে আরো কিছুদিন কেটে গেল। গতকাল দুপুরের পর ব্রডব্যন্ড বন্ধ ছিল
কিছুক্ষণ। কি মনে হতেই বইটা ওপেন করে পড়া শুরু করলাম। তখনও কি জানতাম আমার জীবনের আরো
একটি সেরা ভাললাগা বই পড়তে চলেছি আমি?
আমি একজন বিধবা মহিলা আমার বয়স এখন ৬০ বছর। আমি স্কুল শিক্ষিকা
ছিলাম।
আমার একটা-ই ছেলে যার বয়স এখন ৩৬ বছর। ওর নাম আশিক আদনান দিপ,
থাকে অষ্ট্রেলিয়াতে। আমার হাজবেন্ড যখন মারা
যায় তখন আমার বয়স ৪০ বছর। আর আমার ছেলে আশিক আদনান দিপ যাকে আমি দিপ বলে ডাকি ওর বয়স
তখন ১৬ বছর।
ইতালির দেশ ধর্ম ভুলিয়া লুটাইল তব
পায়।”
---- সৈয়দ মুজতবা আলী
সৈয়দ মুজতবা আলী’র সেই
বিখ্যাত ‘রসগোল্লা’ গল্পটি অনেকেই পড়ে থাকবেন। শিশু-কিশোর, তরুণ-যুবা থেকে শুরু করে
বৃদ্ধ সকল শ্রেণির মানুষের কাছে রসগোল্লা অমৃতের সমান। দেশে ছেড়ে রসগোল্লার স্বাদ ছড়িয়ে
পড়েছে বিদেশের মাটিতে। কিন্তু কবে, কোথায়, কখন, কিভাবে আর কে প্রথম তৈরি করেন ‘রসগোল্লা’?
বইয়ের হাট নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে
অমর মিত্রের একটা সাক্ষাৎকার দেখে ‘ধ্রুবপুত্র’ পড়তে শুরু করেছিলাম। শুরুতেই এই উপন্যাসের
ভাষা আমাকে মুগ্ধ করে আবার কেমন যেন বিরক্তও। কথাটা একটু অদ্ভুত শোনালেও এটাই আমার
সত্যিকারের অনুভূতি। কাহিনীর মধ্যে প্রবেশ করে একটা ঘোরলাগা অনুভূতি তৈরি হল। মনে হল
আমি যেন একটা স্বপ্নের জগতে ঢুকে পড়েছি। প্রাচীন কাহিনী হিসাবে লেখক এখানে স্বার্থক
বলেই আমার মনে হয়েছে। বইটি পড়তে পড়তে আমি সত্যিই হারিয়ে গেছিলাম সেই উজ্জয়নী নগরিতে,
সেই মহাকালের মন্দির, সেই বৃষ্টিহীন ধূসর প্রান্তর, রাতের তারা মহারাজ ভর্তৃহরি, সেই
গণিকালয় যেন বাস্তব হয়ে উঠে এসেছিল আর আমি সেখানে বিচরণ করছি প্রতিটি চরিত্রের সাথে।
অবসরপ্রাপ্ত নিউক্লিয়ার
সায়েন্টিস্ট বিক্রম সিং খুন হয়েছেন। খুন হওয়ার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে ক্যালিফোর্নিয়ার
সান জোসে’তে তার একমাত্র ভাইপো বিজয় সিং কে ৫টা মেইল পাঠিয়ে যান তিনি। অদ্ভুত
রহস্যময় সেই মেইলগুলো পড়ে কিছুই বুঝতে পারে না বিজয় সিং। কাকার মৃত্যু সংবাদ শুনে
দ্রুত দেশে ফিরে আসে বিজয়। পাশে এসে দাঁড়ায় কাকার বন্ধু ডা. শুকলা আর তার মেয়ে
রাধা। সাথে যোগ দেয় খুব কাছের বন্ধু কলিন। একে একে ই-মেইলের রহস্য
উন্মোচিত হতে শুরু করে। পাঠক নিমেষেই চলে যায় ২৩০০ বছর পূর্বে। খ্রীষ্টপূর্ব ২৪৪
অব্দে তৎকালীন মহান সম্রাট অশোক খোজ পান এক গুপ্ত রহস্যের। মহাভারতেই খুব পুরোনো
একটি সংস্করণ যেখানে “বিমান পর্বে” উল্লেখ আছে অদ্ভুত অথচ শক্তিশালী এক মারনাস্ত্রের।
সম্রাট অশোক এবং তার মন্ত্রী সুরসেন উপলব্দি করেন এই মারনাস্ত্র নিমেষেই সমগ্র
পৃথিবীকে ধ্বংস করে দিতে পারে আর তাই ৯ জন সদস্য নিয়ে গঠন করেন গুপ্ত সংঘ যাদের
কাজ এই মারনাস্ত্রকে লোকচক্ষুর আড়ালে রাখা। বিক্রম সিং এদেরই বর্তমান দলনেতা
ছিলেন।
“আমার একটা মজার ব্যপার আছে। আমি যা
ই লেখালিখি না কেন, আমি গোটা জিনিষটা ভাবতে পারি না। থিম করতে পারি না। আগে থেকে কোন
প্লট তৈরি করতে পারি না। এটা আমার একটা অদ্ভুত ধরনের কি বলব আমার একটা ব্যর্থতা যে
আমি গোটা উপন্যাসটাকে আগে ছক করে ভেবে নিয়ে লিখতে পারি না। কখনই পারিনি। তাহলে আমি
কি করি? আমি একটা লাইন ভাবি। যেকোন একটা লাইন। একটা ভালো লাইন। মনে চলে এলো, সে লাইনটা
লিখি, লিখে অনেকক্ষণ বসে থাকি। সেই লাইনটা থেকেই যেনো ঐ যে একটা তুলো থেকে যেমন আস্তে
আস্তে তকলুকে সুতো কেটে বের করে ঠিক সেই রকমভাবে আমি তেমনি আমার একটা লাইন থেকে বাদবাকী
উপন্যাসটা তৈরি হতে থাকে।”
মিসির আলী'র গল্পগুলো
পড়তে মোটামুটি ভালই লাগে। কিন্তু সমস্যা এক জায়গায়। গল্পগুলো রূপকথার মত এবং সেই
রূপকথাকে আবার বিজ্ঞানের মোড়কে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। হিমুতেও অবাস্তব
কল্পনা আছে কিন্তু সেখানে বিজ্ঞানের সাহায্য নিয়ে হিমু'র
কর্মকান্ডকে ব্যাখ্যা করা হয়নি তা-ই হিমু'কে এত ভালো লাগে।
যা হোক মনির নামের একটি ছেলে
ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন জগতে ভ্রমন করে- এমন একটা গল্প নিয়েই নিষাদ। সমস্যা
হচ্ছে মনির যখন ভিন্ন জগতে প্রবেশ করে সেটা যে আসলেই আছে তা'র একটা
প্রমানও সে নিয়ে আসে। বিনু নামের একটি মেয়ে যে কিনা এই জগতে মনিরের এক সহকর্মী'র মেয়ে, ভিন্ন জগতে
এই বিনুই আবার মনিরের স্ত্রী। ভিন্ন জগত থেকে আসার সময় মনির একটা ছবি নিয়ে আসে
যেখানে দেখা যাচ্ছে মনির ও বিনু বিয়ের আসরে বসে আছে। সেই জগতে মনিরের বাবা বেঁচে
আছেন এবং মাঝে মধ্যে অভিমান করে মনির'কে চিঠিও লেখেন। কিন্তু এই জগতে
মনিরের বাবা বেঁচে নেই। এমনই একটা অদ্ভুত গল্প নিয়ে হুমায়ুন আহমেদের নিষাদ।
সালটা ২০০১। নবম শ্রেণির ছাত্র হিসেবে
বছরের শুরুতে পড়ার চাপ নেই বললেই চলে এমন একটা সময়ে স্কুল লাইব্রেরি থেকে একদিন নিয়ে
এলাম “পথের পাঁচালি”। এমন একটা কালজয়ী উপন্যাস পড়ার ক্ষেত্রে বয়সটা অপরিনত ছিল কিনা
জানিনা, শুধু এটুকু মনে আছে বইটা পড়তে পড়তে এক একবার মনে হয়েছিল পৃথিবীর সবচেয়ে পাষণ্ড
মানুষটির নাম বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যয়। কিশোর বয়সের আবেগী মন বার বার প্রশ্ন করেছিল
এত নির্মম, নিষ্ঠুর কিভাবে হতে পারেন একটা মানুষ?
ইতি হল
পুতুলনাচের ইতি কথা'র।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যয় যেভাবে নাচালেন শশী, কুসুম, কুমুদ, মতি, যদব, গোপাল, সেনদিদিরা সেভাবেই নাচলেন। যদি
প্রশ্ন করা হয় 'পুতুল
নাচিয়ে' হিসেবে
কেমন মানিক বন্দ্যোপাধ্যয়?
উত্তর এক কথায় 'অসাধারণ'। সত্যি এত
চমৎকারভাবে সবাইকে মানিকবাবু নাচিয়েছেন যে, যতক্ষণ পুতুল নাচেরসাথে ছিলাম ততক্ষণ
মনপ্রাণ সব ডুবে ছিল পুতুলনাচের ইতিকথায়। পুতুলগুলোর দুঃখ-কষ্ট, আবেগ-অনুভূতিগুলো
সব নিজের মধ্যে টের পাচ্ছিলাম। মনে হচ্ছিল গাওদিয়া গ্রামের প্রতিটি ইঞ্চি মাটি, বৃক্ষ, লতা-পাতা, নদী সবই যেন
চলচিত্রের মত চোখের সামনে ভাসছে।