বৃহস্পতিবার, ২৯ জুলাই, ২০২১

রসগোল্লা আবিষ্কার


 “রসের গোলক, এত রস কেন তুমি ধরেছিলে হায়।

ইতালির দেশ ধর্ম ভুলিয়া লুটাইল তব পায়।”

---- সৈয়দ মুজতবা আলী 

সৈয়দ মুজতবা আলী’র সেই বিখ্যাত ‘রসগোল্লা’ গল্পটি অনেকেই পড়ে থাকবেন। শিশু-কিশোর, তরুণ-যুবা থেকে শুরু করে বৃদ্ধ সকল শ্রেণির মানুষের কাছে রসগোল্লা অমৃতের সমান। দেশে ছেড়ে রসগোল্লার স্বাদ ছড়িয়ে পড়েছে বিদেশের মাটিতে। কিন্তু কবে, কোথায়, কখন, কিভাবে আর কে প্রথম তৈরি করেন ‘রসগোল্লা’?

রবিবার, ১৮ জুলাই, ২০২১

ধ্রুবপুত্র- অমর মিত্র

 


বইয়ের হাট নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে অমর মিত্রের একটা সাক্ষাৎকার দেখে ‘ধ্রুবপুত্র’ পড়তে শুরু করেছিলাম। শুরুতেই এই উপন্যাসের ভাষা আমাকে মুগ্ধ করে আবার কেমন যেন বিরক্তও। কথাটা একটু অদ্ভুত শোনালেও এটাই আমার সত্যিকারের অনুভূতি। কাহিনীর মধ্যে প্রবেশ করে একটা ঘোরলাগা অনুভূতি তৈরি হল। মনে হল আমি যেন একটা স্বপ্নের জগতে ঢুকে পড়েছি। প্রাচীন কাহিনী হিসাবে লেখক এখানে স্বার্থক বলেই আমার মনে হয়েছে। বইটি পড়তে পড়তে আমি সত্যিই হারিয়ে গেছিলাম সেই উজ্জয়নী নগরিতে, সেই মহাকালের মন্দির, সেই বৃষ্টিহীন ধূসর প্রান্তর, রাতের তারা মহারাজ ভর্তৃহরি, সেই গণিকালয় যেন বাস্তব হয়ে উঠে এসেছিল আর আমি সেখানে বিচরণ করছি প্রতিটি চরিত্রের সাথে।

বৃহস্পতিবার, ১ জুলাই, ২০২১

মহাভারত সিক্রেট, ক্রিস্টোফার সি ডয়েল

 


অবসরপ্রাপ্ত নিউক্লিয়ার সায়েন্টিস্ট বিক্রম সিং খুন হয়েছেন। খুন হওয়ার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে ক্যালিফোর্নিয়ার সান জোসে’তে তার একমাত্র ভাইপো বিজয় সিং কে ৫টা মেইল পাঠিয়ে যান তিনি। অদ্ভুত রহস্যময় সেই মেইলগুলো পড়ে কিছুই বুঝতে পারে না বিজয় সিং। কাকার মৃত্যু সংবাদ শুনে দ্রুত দেশে ফিরে আসে বিজয়। পাশে এসে দাঁড়ায় কাকার বন্ধু ডা. শুকলা আর তার মেয়ে রাধাসাথে যোগ দেয় খুব কাছের বন্ধু কলিন। একে একে ই-মেইলের রহস্য উন্মোচিত হতে শুরু করে। পাঠক নিমেষেই চলে যায় ২৩০০ বছর পূর্বে। খ্রীষ্টপূর্ব ২৪৪ অব্দে তৎকালীন মহান সম্রাট অশোক খোজ পান এক গুপ্ত রহস্যের। মহাভারতেই খুব পুরোনো একটি সংস্করণ যেখানে “বিমান পর্বে” উল্লেখ আছে অদ্ভুত অথচ শক্তিশালী এক মারনাস্ত্রের। সম্রাট অশোক এবং তার মন্ত্রী সুরসেন উপলব্দি করেন এই মারনাস্ত্র নিমেষেই সমগ্র পৃথিবীকে ধ্বংস করে দিতে পারে আর তাই ৯ জন সদস্য নিয়ে গঠন করেন গুপ্ত সংঘ যাদের কাজ এই মারনাস্ত্রকে লোকচক্ষুর আড়ালে রাখা। বিক্রম সিং এদেরই বর্তমান দলনেতা ছিলেন।

মঙ্গলবার, ২২ জুন, ২০২১

একটা লাইন থেকে সমগ্র উপন্যাস লেখেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যয়

 


“আমার একটা মজার ব্যপার আছে। আমি যা ই লেখালিখি না কেন, আমি গোটা জিনিষটা ভাবতে পারি না। থিম করতে পারি না। আগে থেকে কোন প্লট তৈরি করতে পারি না। এটা আমার একটা অদ্ভুত ধরনের কি বলব আমার একটা ব্যর্থতা যে আমি গোটা উপন্যাসটাকে আগে ছক করে ভেবে নিয়ে লিখতে পারি না। কখনই পারিনি। তাহলে আমি কি করি? আমি একটা লাইন ভাবি। যেকোন একটা লাইন। একটা ভালো লাইন। মনে চলে এলো, সে লাইনটা লিখি, লিখে অনেকক্ষণ বসে থাকি। সেই লাইনটা থেকেই যেনো ঐ যে একটা তুলো থেকে যেমন আস্তে আস্তে তকলুকে সুতো কেটে বের করে ঠিক সেই রকমভাবে আমি তেমনি আমার একটা লাইন থেকে বাদবাকী উপন্যাসটা তৈরি হতে থাকে।”

মঙ্গলবার, ২৩ মার্চ, ২০২১

নিষাদ-হুমায়ুন আহমেদ, রিভিউ

 


মিসির আলী'র গল্পগুলো পড়তে মোটামুটি ভালই লাগে। কিন্তু সমস্যা এক জায়গায়। গল্পগুলো রূপকথার মত এবং সেই রূপকথাকে আবার বিজ্ঞানের মোড়কে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। হিমুতেও অবাস্তব কল্পনা আছে কিন্তু সেখানে বিজ্ঞানের সাহায্য নিয়ে হিমু'র কর্মকান্ডকে ব্যাখ্যা করা হয়নি তা-ই হিমু'কে এত ভালো লাগে।

যা হোক মনির নামের একটি ছেলে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন জগতে ভ্রমন করে- এমন একটা গল্প নিয়েই নিষাদ। সমস্যা হচ্ছে মনির যখন ভিন্ন জগতে প্রবেশ করে সেটা যে আসলেই আছে তা'র একটা প্রমানও সে নিয়ে আসে। বিনু নামের একটি মেয়ে যে কিনা এই জগতে মনিরের এক সহকর্মী'র মেয়ে, ভিন্ন জগতে এই বিনুই আবার মনিরের স্ত্রী। ভিন্ন জগত থেকে আসার সময় মনির একটা ছবি নিয়ে আসে যেখানে দেখা যাচ্ছে মনির ও বিনু বিয়ের আসরে বসে আছে। সেই জগতে মনিরের বাবা বেঁচে আছেন এবং মাঝে মধ্যে অভিমান করে মনির'কে চিঠিও লেখেন। কিন্তু এই জগতে মনিরের বাবা বেঁচে নেই। এমনই একটা অদ্ভুত গল্প নিয়ে হুমায়ুন আহমেদের নিষাদ।


শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

পথের পাঁচালী-বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যয় রিভিউ

 


সালটা ২০০১। নবম শ্রেণির ছাত্র হিসেবে বছরের শুরুতে পড়ার চাপ নেই বললেই চলে এমন একটা সময়ে স্কুল লাইব্রেরি থেকে একদিন নিয়ে এলাম “পথের পাঁচালি”। এমন একটা কালজয়ী উপন্যাস পড়ার ক্ষেত্রে বয়সটা অপরিনত ছিল কিনা জানিনা, শুধু এটুকু মনে আছে বইটা পড়তে পড়তে এক একবার মনে হয়েছিল পৃথিবীর সবচেয়ে পাষণ্ড মানুষটির নাম বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যয়। কিশোর বয়সের আবেগী মন বার বার প্রশ্ন করেছিল এত নির্মম, নিষ্ঠুর কিভাবে হতে পারেন একটা মানুষ?

রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

পুতুলনাচের ইতিকথা-মানিক বন্দ্যোপাধ্যয়


ইতি হল পুতুলনাচের ইতি কথা'র। মানিক বন্দ্যোপাধ্যয় যেভাবে নাচালেন শশী, কুসুম, কুমুদ, মতি, যদব, গোপাল, সেনদিদিরা সেভাবেই নাচলেন। যদি প্রশ্ন করা হয় 'পুতুল নাচিয়ে' হিসেবে কেমন মানিক বন্দ্যোপাধ্যয়? উত্তর এক কথায় 'অসাধারণ'। সত্যি এত চমৎকারভাবে সবাইকে মানিকবাবু নাচিয়েছেন যে, যতক্ষণ পুতুল নাচেরসাথে ছিলাম ততক্ষণ মনপ্রাণ সব ডুবে ছিল পুতুলনাচের ইতিকথায়। পুতুলগুলোর দুঃখ-কষ্ট, আবেগ-অনুভূতিগুলো সব নিজের মধ্যে টের পাচ্ছিলাম। মনে হচ্ছিল গাওদিয়া গ্রামের প্রতিটি ইঞ্চি মাটি, বৃক্ষ, লতা-পাতা, নদী সবই যেন চলচিত্রের মত চোখের সামনে ভাসছে।

রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি-মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন


নামটা পড়েই চমকে উঠেছিলাম। শুধু যে অদ্ভুত তা-ই নয়, নামটির মধ্যে কেমন যেন একটা রোমান্টিকতা খুজে পাচ্ছিলাম যদিও জানতাম মোহাম্মদ নাজিমুদ্দিন মোটেও কোন রোমান্টিক উপন্যসের লেখক নয়। এর আগে এই লেখকের “কেউ কেউ কথা রাখে” বইটা পড়েছিলাম। এই বইটা পড়েও বেশ অবাক হয়েছিলাম। কেউ কেউ কথা রাখে- এমন একটি রোমান্টিক নামের আড়ালে কি ভয়ংকর এক থ্রিলার!

বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

কবি-তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যয়


আপতদৃষ্টিতে গল্প খুবই ছোট এবং সরল। হিন্দু সমাজের পতিততম স্তরের অন্তর্গত ডোম সম্প্রদায়ের সন্তান নিতাই যার পূর্বপুরুষরা কেউ ছিল ভয়ংকর ডাকাত কেউ বা সিধেল চোর। এমন বংশের ছেলে নেতাই কিনা হয়ে গেল কবিয়াল। ঘটনা তখনও অতটা প্রচার পায়নি। সেবার তাদের গ্রামের বাৎসরিক কবিগানের আসরে নির্ধারিত কবিয়াল নোটন টাকার লোভে অন্যত্র পালিয়ে গেলে নেতাইয়ের ভাগ্য খুলে যায়। তর্কযুদ্ধে মহাদেব কবিয়ালের কাছে হেরে গেলেও আশেপাশের পাঁচগ্রামের মানুষ নেতাইকে প্রশংসায় ভাসিয়ে দিয়েছিল। সবচেয়ে বিস্মিত হয়েছিল তার বন্ধু রাজনের শ্যালিকা যাকে তারা ঠাকুরঝি নামে ডাকত।

ঠাকুরঝি'র কালো রঙে মজে গিয়ে কবি নেতাই লিখে ফেলল, "কালো যদি মন্দ তবে কেশ পাকিলে কাঁন্দ কেনে"। ক্রমেই যখন সে ঠাকুরঝি'র প্রেমে ডুবে যাচ্ছে তখনই আবির্ভাব ঘটে এক ঝুমুরদলের। এই ঝুমুরদলের নর্তকী বসন্তের সাথে তার এক তিক্তমধুর সম্পর্ক তৈরি হয়। তারপর সেই দলের সাথেই সে এখানে সেখানে কবিগান গেয়ে বেড়াতে থাকে।

মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

ইন্দ্রনাথ-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যয়

 


একটা দীর্ঘ সময় ধরে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যয়ই ছিলেন আমার জীবনের সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যক্তিত্বের নাম। আসলে এত সহজ ভাষায় গল্প বলার দক্ষতা এবং গ্রাম্য জীবনের প্রাত্যহিক তুচ্ছ ঘটনাকে  চমৎকারভাবে সাহিত্যে ফুটিয়ে তোলা শুধুমাত্র তার পক্ষেই সম্ভব ছিল।

দীপু নাম্বার টু-মুহাম্মদ জাফর ইকবাল


তখন বাড়িতে টেলিভিশন ছিল না। শুক্রবার দুপুরের পর বিটিভি'তে পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা চলচিত্র সম্প্রচারিত হতো বলে পাশের বাড়ির এক কাকু টিভিটা বারান্দায় সকলের দেখার জন্য উন্মুক্ত করে দিতেন। সেদিনও আগ্রহ নিয়ে ছবি দেখতে বসেছি। ছবির নাম "দীপু নাম্বার টু"। ছবির প্রিন্ট অথবা যেকোন কারণে শুরুটা খুব বেশি ভাল লাগল না। তবুও ধৈর্য্য সহকারে দেখে চলেছি। চলতে চলতে কখন যে ছবির মধ্যে পুরোপুরি ডুবে গেছি আমি নিজেই জানি না। ছবিটা শেষ হতে সন্ধ্যা পার হয়ে গেল। সাধারণত সেই সময়ে আমি সন্ধ্যার সাথে সাথেই বাড়ি ফিরে আসতাম। সেদিন কিন্তু ছবিটি শেষ না করে ফিরতে পারলাম না।

সোমবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

মানবজমিন-শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যয়

 


শ্রীনাথ, শ্রীনাথের স্ত্রী তৃষা, তাদের ছেলে সজল, শ্রীনাথের মেঝভাই দীপনাথ, তাদের বোন বিলু ও ভগ্নিপতি প্রীতম এবং দীপনাথের বস বোস সাহেব ও তাঁর স্ত্রী মণিদীপা- সব মিলিয়ে এই হচ্ছে মানবজমিন এর প্রধান চরিত্রসমূহ।  

শ্রীনাথ কলকাতায় এক প্রেসে চাকরি করেন। তিনি কিছুটা উদাসীন প্রকৃতির, ভীরু এবং ব্যক্তিত্বহীন। স্ত্রী, পুত্র কন্যাদের নিয়ে রতনপুর গ্রামে থাকেনসংসারে তিনি উপেক্ষিত। প্রবল ব্যক্তিত্বসম্পন্ন স্ত্রী তৃষাই পরিবারের সর্বময় কত্রী। শ্রীনাথের দাদা মল্লিনাথ মৃত্যুর আগে সব সম্পত্তি লিখে দিয়ে গেছেন তৃষার নামে।

রবিবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০২১

দূরবীন-শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যয়

 


১৯২৯ সালের শীতকালের এক ভোরবেলা হেমকান্ত চৌধুরির হাত থেকে দড়িসহ বালতি কুয়োর জলে পড়ে যায়। ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরবর্তী বাংলাদেশের এক জমিদারের জীবনের এই তুচ্ছ ঘটনা দিয়েই দূরবীন উপন্যাসের কাহিনী শুরু। ঘটনা তুচ্ছ হলেও জমিদার হেমকান্তের কাছে তা এক দার্শনিক চিন্তার জগৎ খুলে দেয়। পয়তাল্লিশ বছর বয়স্ক হেমকান্তের ধারণা জন্মে তিনি এবার বুড়ো হয়েছেন, কেননা দড়িসহ বালতি পড়ে যাওয়ার মত ঘটনা তার জীবনে এর পূর্বে ঘটেছে বলে তিনি মনে করতে পারেন না।

বুধবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২১

কাছের মানুষ-সুচিত্রা ভট্টাচার্য

 


‘কাচের দেয়াল’ শেষ করেই সুচিত্রা ভট্টাচার্যের প্রতি অন্যরকম একটা ভালোলাগা কাজ করছিল। তাই দেরি না করে ‘কাছের মানুষ’ শুরু করলাম। এর আগে অনেকের মুখেই ‘কাছের মানুষ’ এর প্রতি ভালোলাগার কথা শুনেছি কিন্তু আজ কাল করে করে আর পড়া হয়ে ওঠেনিতবে মিতিনমাসী সিরিজের বেশ কিছু গল্প অনেক আগেই পড়া ছিল।

শুরু থেকেই চুম্বকের মত ধরে রেখেছিল কাছের মানুষ। যেন একটা থ্রিলার উপন্যাস পড়ছি, প্রতি মুহূর্তে উত্তেজনা। ৬৩৯ পৃষ্ঠার যথেষ্ঠ বড় এই উপন্যাসটি পড়তে গিয়েও আমার মত অধৈর্য্যশীল মানুষেরও খুব একটা বিরক্তি আসেনি। প্রতিটি চরিত্র এবং পারিপার্শ্বিক বর্ণনা এমন অসাধারণ দক্ষতার সাথে ফুটে উঠেছে যে পড়তে গিয়ে কখন যে সেই সময়ে চরিত্রগুলোর মাঝে ডুবে গেছি নিজেও জানি না।

শনিবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০২১

কাচের দেয়াল-সুচিত্রা ভট্টাচার্য

বৃষ্টির আজ আঠারো।

আঠারো বছর বয়সটা বৃষ্টির কাছে এ সুকান্তর কবিতার থেকেও যেন আরও দুঃসহ, আরও স্পর্ধিত এক চেহারায়। এল অদ্ভুত এক খেলার প্ররোচনা হয়ে। মাকে-না মানার, বাবাকে যাচাই করার একরোখা এক খেলা। সেই খেলাতেই মাতবে এবার বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি, বিবাহবিচ্ছেদের মামলায় জিতে যাকে নিজের হেফাজতে রাখবার অধিকার অর্জন করে নিয়েছিল মা জয়া রায়। সেই বৃষ্টি, আলিপুর জজকোর্টের বারান্দায় দাঁড়িয়ে যার বাবা সুবীর রায় শাসিয়েছিল জয়াকে-দেখে নেব, মেয়ের আঠারো বছর বয়স হলে কীভাবে তাকে তুমি আটকে রাখতে পারো।

শনিবার, ২ জানুয়ারী, ২০২১

সেই সময়-সুনীল গঙ্গোপাধ্যয়


 

মাত্র সাত মাস দশ দিন গর্ভবাসের পর জন্ম গ্রহণ করলেন কলকাতার বিখ্যাত রামকোমল সিঙ্গীর একমাত্র পুত্র নবীনকুমার। নবীনকুমারের জন্মের মধ্য দিয়েই সূচনা হল ১৮৪০ থেকে ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি সময়কে কেন্দ্র করে ভারতবর্ষ বিশেষকরে কলকাতা শহরের ইতিহাস আশ্রয়ী উপন্যাস “সেই সময়”। ইংরেজ শাসনের প্রভাবে এই সময়ে কলকাতার বণিক তথা ধনী শ্রেণির মানুষের মধ্যে যে ভোগ-বিলাসিতা এবং সমাজ সংস্কারের তুমুল জোয়ার এসছিল তা অত্যন্ত নিখুতভাবে ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসের প্রতিটি পাতায়।

বৃহস্পতিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২০

দ্যা পিরামিড- ইসমাঈল কাদরী


এক সকালে ফারাও চিপস সিদ্ধান্ত নিলেন যে তিনি তার জন্য কোনো পিরামিড তৈরি করবেন না। তার এই সিদ্ধান্তে সভাসদ সবাই হতবাক হয়ে পড়লোকোনো পিরামিড তৈরি হবে না! তাহলে কীভাবে রক্ষা পাবে এই দেশ। পিরামিড ছাড়া অশুভ ছায়া এ দেশকে আচ্ছন্ন করে ফেলবে। পিরামিড যদি নির্মাণ করা না হয় তাহলে এ জাতিকে একটা কাজের মধ্যে দাসদের মতো আটকে রাখতে না পারলে দেশে শৃঙ্খলা তৈরি হয়ে যাবে। অবশেষে সভাসদ আর প্রধান কৌশলী হেমিউনির যুক্তিতে ফারাও খুফু (যিনি চিওপস নামেও পরিচিত) রাজি হলেন বিশাল আকৃতির এই সমাধি তৈরি করতে। 

রবিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২০

মোজাফফার আলী মোড়ল এর বিদায় সংবর্ধনা

 


ডুমুরিয়া এনজিসি এ্যান্ড এনসিকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী

জনাব মোঃ মোজাফফার আলী মোড়ল এর অবসরজনিত বিদায় উপলক্ষে

দু’টি কথা

বিদায় সংবর্ধনা


 


ডুমুরিয়া এনজিসি এ্যান্ড এনসিকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী

বাবু রঞ্জন কুমার জোদ্দার এর  অবসরজনিত বিদায় উপলক্ষে

দু’টি কথা

শনিবার, ১০ অক্টোবর, ২০২০

আশি দিনে বিশ্বভ্রমণ-জুল ভার্ন

 


বাগ্মী হিসেবে দুনিয়াজোড়া নাম কিনেছিলেন শেরিডান। আঠারো শতকের প্রথম ভাগে যে-বাড়িটিতে তিনি পরলোকগমন করেন, আঠারো শতকের শেষভাগে সেই বাড়িটিতেই বসবাস করতেন রিফর্ম ক্লাবের সদস্য ফিলিয়াস ফগ। ফগের টাকাকড়ির কোন অভাব নেই। কিন্তু কিভাবে সে-টাকা তাঁর কাছে আসে সে এক বিরাট রহস্য। সবাই তাঁকে রিফর্ম ক্লাবের সদস্য হিসেবেই জানে, কাজকর্ম কিছু কখনও কেউ তাকে করতে দেখেনি। খুব কম কথা বলেন ফগ। কম খরচ করেন। তার সংযম সম্পর্কে লোকের মুখে শুধু প্রশংসাই শোনা যায়। তিনি যে কৃপণ তাও নয়, কেননা প্রচুর পরিমাণে দান করতে দেখা যায় তাঁকে। বিলাসিতা একেবারেই পছন্দ করেন না। কিন্তু ফিলিয়াস ফগ সম্পর্কে সবচেয়ে বড় কথা যেটা তা হলো, ঘড়ির কাটা ধরে দৈনন্দিন কাজকর্ম চলে তার, সময়ের এক সেকেন্ড এদিক ওদিক হবার যো নেই।