সোমবার, ৪ মে, ২০২০

এক বছরের রাজা-সুকুমার রায়

সুকুমার রায়
এক ছিলেন সওদাগর— তাঁর একটি সামান্য ক্রীতদাস তাঁর একমাত্র ছেলেকে জল থেকে বাঁচায়। সওদাগর খুশি হয়ে তাকে মুক্তি তো দিলেনই, তা ছাড়া জাহাজ বোঝাই ক'রে নানা রকম বাণিজ্যের জিনিস তাকে বকশিশ দিয়ে বললেন, "সমুদ্র পার হয়ে বিদেশে যাও— এই সব জিনিস বেচে যা টাকা পাবে, সবই তোমার।" ক্রীতদাস মনিবের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে জাহাজে চড়ে রওনা হল বাণিজ্য করতে।
কিন্তু বাণিজ্য করা আর হল না। সমুদ্রের মাঝখানে তুফান উঠে জাহাজটিকে ভেঙ্গে-চুরে জিনিসপত্র লোকজন কোথায় যে ভাসিয়ে নিল, তার আর খোঁজ পাওয়া গেল না।

বিল গেটস ও সংবাদপত্র বিক্রেতা

মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস
একবার এক লোক বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি বিল গেটসকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, "পৃথিবীতে তোমার চেয়ে ধনী আর কেউ আছে কি?"
বিল গেটস জবাব দিয়েছিল, "হ্যাঁ, এমন একজন আছেন যিনি আমার চেয়েও ধনী”।
তারপর তিনি একটি গল্প বললেন--
এই সময়টি ছিল যখন আমি ধনাঢ্য বা বিখ্যাত ছিলাম না। একবার নিউইয়র্ক বিমান বন্দরে একজন সংবাদপত্র বিক্রেতার সাথে আমার সাক্ষাত হলো। আমি একটি সংবাদপত্র কিনতে চেয়েছিলাম কিন্তু দেখেছি আমার কাছে যথেষ্ট টাকা নেই। তাই আমি কেনার সিদ্ধান্ত ছেড়ে পেপারটি বিক্রেতার কাছে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। আমি তাকে আমার অবস্থার কথা বলেছি। বিক্রেতা বললেন, “আমি আপনাকে বিনামূল্যে দিচ্ছি।” আমি পত্রিকাটি নিয়েছিলাম।

একজন অর্থনীতিবিদ ও বিভ্রান্ত যুবক


একবার একজন অর্থনীতিবিদের এক যুবক পাশাপাশি সিটে বসে ট্রেন ভ্রমণ করছিলান। যুবকের মুখে ছিলদুশ্চিন্তার ছাপচলতে চলতে উভয়ের মধ্যে পরিচয় হল।
এক পর্যায়ে যুবকটি অর্থনীতিবিদকে বলল, ‘সাত বছর আগে আমি ভালোবেসে বিয়ে করেছি। আমার একটি ৫ বছরের মেয়ে আছে। আমার স্ত্রী ভালো মানুষ এবং দেখতেও বেশ। কর্মক্ষেত্রে আমিও যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছি। কিন্তু এক বছর আগে একটি সুন্দরী মেয়ের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছে এবং আমি তাকে ভালবেসে ফেলেছি।’
অর্থনীতিবিদ যুবককে জিঙ্গেস করলেন এখন তুমি কী করবে বলে ঠিক করেছো?’
যুবক উত্তর দিলেন, ‘আমি আমার স্ত্রীকে তালাক দিতে চাই। কিন্তু এখনো এ- ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। তাই ভয়ানক দুশ্চিন্তায় আছি।’

খাঁচাবন্দী বাঘ ও সরল ব্রাহ্মণ


এই গল্পটি অনেকেই ছোটবেলায় পড়েছেন। গল্পটি জীবনে চলার পথে একটি চমৎকার দিক নির্দেশনা বলেই আমার মনে হয়, তাই সকলের জন্য শেয়ার করলাম। 

     এক রাজবাড়ীর সামনে একটি খাঁচায় একটি দুষ্টু বাঘ বন্ধী অবস্থায় ছিল। বাঘটি ছিল খুব দুষ্টু আর হিংসুটে। কেউ তাকে পছন্দ করত না। একদিন রাজার মেয়ের বিয়েতে রাজবাড়িতে অনেক লোকের সমাগম হল। সকলে যখন রাজবারীতে প্রবেশ করছিলেন দুষ্টু বাঘ সবাইকে অনুনয়-বিনয় করছিলেন তার খাঁচার দরজাটা খুলে দেওয়ার জন্য। কিন্তু কেউই বাঘের খাঁচার দরজা খুলে দিলেন না, কেননা সকলে জানতেন এই ভয়ংকর বিপদজঙ্ক বাঘের খাঁচার দরজা খুলে দিলে মহাবিপদ। আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন একজন সহজ সরল ব্রাহ্মণ। ব্রাহ্মণ যখন খাঁচার দরজা দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন বাঘ হাতজোড় করে ব্রাহ্মণকে বললেন, “আমাকে দয়া করুন প্রভু, আমাকে দয়া করুন। আমার খাঁচার দরজাটা অনুগ্রহ করে খুলে দিন। আমি বনের বাঘ বনে চলে যাবো।”

শনিবার, ২ মে, ২০২০

'সসেমিরা' মহারাজ নন্দ ও গুরু শারদানন্দ (৩২ পুতুলের উপখ্যান)


মহাকবি কালিদাস
রাজা বিক্রমাদিত্য ও গুরু সারদানন্দ (সংস্কৃতে মহাকবি কালিদাস বত্রিশ পুতুলের উপখ্যান-এর বাঙ্গাল অনুবাদ)
বিশালা নগরে নন্দ নামে মহাশক্তিমান এক রাজা ছিলেন। তাঁর পুত্রের নাম জয়পাল, মন্ত্রীর নাম বহুশ্রুত, পত্মীর নাম ভানুমতী। মন্ত্রী বহুশ্রুত ছয় প্রকার দণ্ডশাস্ত্রবিদ্যা জানতেন। ভানুমতী রাজার অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন। রাজা যখন সিংহাসনে বসতেন তখন ভানুমতী তাঁর বাঁ দিকে অর্ধাঙ্গে থাকতেন। তিনি মুহূর্তকালও ভানুমতীকে ছেড়ে থাকতে পারতেন না। একদিন মন্ত্রী মনে মনে ভাবলেন, ‘এই রাজা নির্লজ্জের মতো সভামধ্যে পত্মীকে নিয়ে সিংহাসনে বসেন। সকলেই রানীকে দেখে। এ অত্যন্ত অনুচিত।’ তিনি একদিন অবসর বুঝে রাজাকে বললেন, মহারাজ! আপনার কাছে আমার একটি বিষয় নিবেদন করার আছে।
       রাজা বললেন, কী, বলো। 

শুক্রবার, ১ মে, ২০২০

চীনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট শী জিং পিং ও ডিম কাহিনী

শী জিং পিং

চীনের বর্তমান (২০২০) প্রেসিডেন্ট Xi Jing Ping (শী জিং পিং) এক ভাষণে বলেছিলেন:
আমার বাবার দেওয়া তিনটে উপদেশ আমাকে আজ এখানে পৌঁছে দিয়েছে।
ছোটবেলায় আমি খুব স্বার্থপর ছিলাম। সবকিছুতেই নিজের সুবিধে আর লাভটা বুঝে নেবার চেষ্টা করতাম। আমার এই দোষের জন্য আস্তে আস্তে আমার বন্ধুর সংখ্যা কমতে শুরু করল। শেষে অবস্থা এমন হলো যে আমার আর কোনো বন্ধুই অবশিষ্ট রইল না। কিন্তু, সেই অপরিণত বয়েসে আমি এর জন্য নিজেকে দায়ী না করে সিদ্ধান্ত নিলাম আমার বন্ধুরা আসলে হিংসুটে। ওরা আমার ভাল দেখতে পারে না। আমার বাবা সবই লক্ষ করতেন, মুখে কিছু না বললেও।

বুধবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২০

কেউ কেউ কথা রাখে-মোহাম্মদ নাজিমুদ্দিন


কেউ কথা রাখেনি” সুনীল গঙ্গোপাধ্যয়ের অত্যন্ত বিখ্যাত একটি কবিতার শিরোনাম। কথাগুলো বেশ কাব্যিক ধরনের। তবে “কেউ কেউ কথা রাখে” কোন কবিতার বই নয়, বরং একটা চমৎকার থ্রিলার উপন্যাস। লেখক-মোহাম্মদ নাজিমুদ্দিন।
উপন্যাসের সময়টা ১৯৭২। নববিবাহিত এক তরুণীকে (মিলি) ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে— তদন্তে জড়িয়ে পড়েছেন দুইজন পুলিশ অফিসার, একজন আবার আমাদের লেখক স্বয়ং। মিলির স্বামী মিনহাজের সাথে কথা বলার সময় কিছু ফটোগ্রাম লেখকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ফটোগ্রাফগুলো নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে লেখকের সন্দেহ হয় ফটোগ্রাফের একজনের উপর। ছবির ব্যক্তির সম্পর্কে আরো কিছু তথ্য সংগ্রহ করতে লেখক হানা দেন মিলির বান্ধবীর (রামজিয়া শেহ্‌রিন) বাড়িতে। এই রামজিয়া শেহ্‌রিন অত্যন্ত আকর্ষণীয় একটি চরিত্র এই গল্পে। প্রথম দিনই রামজিয়ার প্রতি দূর্বল হয়ে পড়েন লেখক। থ্রিলার উপন্যাসে দেখায় দেয় রোমাঞ্চ। 

বর্ণপরিচয়-ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর


আশির দশক কিংবা তার আগে যাদের জন্ম তাদেরকে সম্ভাবত বর্ণ পরিচয় সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই।
তবে বর্তমান সময়ের ছেলেমেয়েরা সম্ভাবত এই বইটির নামও শোনেনি। “বর্ণপরিচয়” ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত একটি বাংলা বর্ণশিক্ষার বই। বইটি দুটি খন্ডে (প্রথম ভাগ, দ্বিতীয় ভাগ) বিভক্ত। প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৮৫৫ সালের এপ্রিল মাসের ১৩ তারিখ। তখনকার সময়ে দুই পয়সা মূল্যের এই ছোট্ট বইটি বাংলাভাষাবাসীদের শিক্ষা ক্ষেত্রে এক মহাবিপ্লব সৃষ্টি করেছিল। বর্ণপরিচয় এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো, এটি শিশুদের উপযোগী সহজবোধ্য ও সংক্ষিপ্ত বাক্যের সমন্বয়ে রচনা করা হয়েছে। শিশু বর্ণক্রমিক পদ্ধতিতে বর্ণ শিখবে, বর্ণের সঙ্গে মুখে মুখে ছোট ছোট শব্দ শিখবে, এরপর বর্ণপরিচয়-এর পরীক্ষা, তারপর বর্ণযোজনা ও ফলা সংযোগে বানান শেখার সূচনা। এরপর রয়েছে সহজবোধ্য ছোট বাক্যের ছোট ছোট প্রাঞ্জল গদ্য রচনা। 

ডিসেপশন পয়েন্ট-ড্যান ব্রাউন


“দ্যা ভিঞ্চি কোড” ড্যান ব্রাউনের সবচেয়ে আলোচিত একটি বইয়ের নাম এবং অবশ্যই আমার পড়া একটি সেরা থ্রিলার “দ্যা ভিঞ্চি কোড” পড়ার পর ড্যান ব্রাউনের বেশ ভক্ত হয়ে যাই আমার পড়া ব্রাউনের লেখা দ্বিতীয় বইয়ের নাম “দ্যা লস্ট সিম্বল” আর মাত্র গতকালই শেষ করলাম ড্যান ব্রাউনের লেখা আরো একটি চমৎকার থ্রিলার “ডিসেপশন পয়েন্ট” বইটা পড়ার সময় সত্যিই মনে হয়েছে এটা একটি থ্রিলার থ্রিলার বলতে সাধারণত যা বোঝায় অর্থাৎ রহস্য, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, অনিশ্চয়তা, উত্তেজনা,নাটকীয়তা সবকিছুই চমৎকারভাবে উপস্থিত হয়েছে “ডিসেপশন পয়েন্ট” বইটিতে। 
বইটির কাহিনী আবর্তিত হয়েছে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যার সাথে যুক্ত হয়েছে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA ফলে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা একটা ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে কাহিনীর শুরুতে দেখা যায় সিনেটর সেজউইক স্যাক্সটন তার একমাত্র মেয়ে র‍্যাচেল স্যক্সটনের সাথে একটি রেস্টুরেন্ট দেখা করছেন 

অষ্টম শ্রেনির বাংলা বহুনির্বাচনী প্রশ্ন


১।     কোন গল্পটি পাঠে শিক্ষার্থীর মধ্যে কর্তব্য পরায়ণতা ও নৈতিকতার চেতনা সৃষ্টি হবে?
ক) অতিথির স্মৃতি              খ) পড়ে পাওয়া
গ) তৈলচিত্রের ভূত      ঘ) সুখী মানুষ
০২।    বাংলা সাহিত্যে কালজয়ী কথাশিল্পী বলা হয় কাকে?
ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর                  
খ) বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যয়
গ) শৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যয়                
ঘ) মানিক বন্দোপাধ্যয়

মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২০

আপনাকে বলছি স্যার

“কোন হাসপাতাল যদি কেবল সুস্থ্য ব্যক্তিদের পরিচর্যা করে আর রোগাক্রান্তদের বাদ দেয় তাহলে তাকে কি বলা হবে?”
এমন প্রশ্নই করা হয়েছে গতানুগতিক শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে আপনাকে বলছি স্যার” বইটিতে। প্রথাগত শিক্ষা ব্যবস্থায় আমরা আসলে এই ব্যপারটিকে ঘটতে দেখি প্রতিনিয়ত। যেখানে এগিয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দেওয়া হয়, পুরস্কৃত করা হয় আর ব্যর্থদের, ফেল করাদের বাদ দিয়ে দেওয়া হয় স্কুল থেকে। কিন্তু এই ব্যবস্থা মেনে নিতে পারেননি একজন, তিনি ফাদার মিলানি (পুরো নাম ডন লোরেঞ্জো মিলানি)। মিলানি ১৯৫৪ সালে বারবিয়ানা চার্চে (ইতালি) যোগদান করেন। যোগদানের পর তিনি বারবিয়ানাতে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন যেটা ছিল প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। বিদ্যালয় থেকে বাদ পড়া ছেলেমেয়েদের নিয়েই গড়ে উঠেছিল তার বিদ্যালয়টি। এই ব্যতিক্রমী বিদ্যালয়টির শিক্ষা পদ্ধতি ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। এখানে পুরোন ছাত্রেরা অনেক সময়ই নতুনদের পড়াত, আর শিক্ষার অঙ্গ হিসেবে পড়ুয়াদের সমাধান করতে হত তাদের প্রাত্যহিক জীবনের নানা সমস্যাএই ব্যতিক্রমী বিদ্যালয়টিই সে সময় সাড়া জাগিয়েছিল সমগ্র ইতালীজুড়ে।

সোমবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২০

নাস্তিক পন্ডিতের ভিটা


যখন বৃক্ষরাজির ভিতর দিয়ে বহে যাবে সমুষ্ণ বাতাস
নদীর উপর ছায়া ফেলবে গোধূলিকালীন মেঘ
পুষ্পরেণু ভেসে আসবে বাতাসে
আর পালতোলা নৌকা ভেসে যাবে বিক্ষিপ্ত  স্রোতধারায়….
সহসা অবলুপ্ত দৃষ্টি ফিরে পেয়ে তুমি দেখবে—
আমার কেশপাশে বিজড়িত রয়েছে অস্থিনির্মিত মালাঃ
তখন--- কেবল তখনই আমি তোমার কাছে আসব…

একাদশ শতকে কুন্তলা নামে এক নারী এই কথাগুলো বলে হারিয়ে গেল মৃত্যুর অতল গহ্বরে। কিন্তু কার কাছে ফিরে আসার অঙ্গীকার করে গেলেন কুন্তলা? চন্দ্রগর্ভ বা পন্ডিত অতীশ দীপংক­র। তারপর কি হলো?
এই প্রশ্নই আমাকে ব্যক্তিগতভাবে এই বইটি সম্পূর্ণ করতে উৎসাহিত করেছে। 

মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল, ২০২০

বই পর্যালোচনা লিখবেন যেভাবে


(একটি উইকিহাউ অনুবাদ)  
কোন বই সম্পর্কে আলোচনা করা মানে বইয়ের সারাংশ বলা নয়, বইটি সম্পর্কে একটি সমালোচনামূলক আলোচনা করার এটা এক দারুন সুযোগ। আলোচক হিসেবে আপনার ব্যক্তিগত উদ্যোগের সাথে যথাযথ বিশ্লেষণমূলক অধ্যয়নকে একীভূত করে ফেলা উচিত হবে। একটি ভালো আলোচনা পাতায় পাতায় কী আছে তার বর্ণনা দেয়; বইটি নিজ উদ্দেশ্য সাধনে কতটা সফল তার বিশ্লেষণ করে; শেষে একটি অনন্য পরিপ্রেক্ষিত থেকে প্রতিক্রিয়া ও মতামত ব্যক্ত করে।

প্রথম অংশঃ গ্রন্থ আলোচনার জন্য প্রস্তুতি
১. বই পড়ার সাথে সাথে নোট গ্রহণঃ যদি সম্ভব হয় তাহলে বইটি বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার পড়ুন। বারবার একটি বই পড়লে পাঠকের চোখে গল্পের শরীরটি দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। গল্পের সজ্জাপদ্ধতি ও চরিত্র বা চরিত্রগুলো নতুন অথবা ভিন্ন আঙ্গিকে ফুটে ওঠে।
বইটি পাঠরত অবস্থায় আপনার মনে যে প্রতিক্রিয়া হবে আর তার সাথে সাথে যে ভাবনাগুলো আসবে তা লিখে ফেলুন অথবা রেকর্ড করে ফেলুন। এলোমেলোভাবে বা ততোটা সঠিক ভাবে না হলেও হবে। আসলে বই পড়ার সাথে সাথে আপনার মনে যে চিন্তা আসবে তার মধ্যে ঝড় তুলে দেয়ার জন্য এই কাজ করা দরকার।

রবিবার, ১২ মে, ২০১৯

মূর্খের দেশে আবার কিসের বিশ্ববিদ্যালয়



রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছিলে। কোলকাতার কোন এক জনসভায় তিনি এ নিয়ে একটি বক্তব্যও দিয়েছিলেন। কিছু মানুষ এমন দাবী করে থাকেন। তাদের এই দাবীর প্রেক্ষিতে বাংলা ব্লগিং জগতে এটা নিয়ে প্রচুর লেখালেখি হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা গেছে উগ্র জাতীয়তাবোধ এবং মৌলবাদী কিছু মুসলমান কর্তৃক এই জাতীয় লেখা বেশি প্রচার করা হয়ে থাকে। সংগত কারণেই তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পরিষ্কার বোঝা যায়। রবীন্দ্রনাথকে বিতর্কিত করার চেষ্টা ইতিহাসে নতুন নয়। কিন্তু যারা রবীন্দ্রনাথ পড়েছেন তারা খুব ভালো করেই তাকে বুঝেছেন। না, আমি দুই-একটা ছোটগল্প বা কবিতা পড়ার কথা বলছি না, রবীন্দ্রনাথকে বুঝতে হলে, জানতে হলে পড়তে হবে অনেক বেশি। 
যারা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধীতাকারী হিসাবে প্রমাণ করতে চান তাদের কেউই রবীন্দ্রসাহিত্য পড়েননি কিংবা পড়লেও পড়েছেন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে। মূলত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছিলেন এমন দাবীর কোন প্রমাণ নেই। ইন্টারনেটে কিছু ব্যক্তিগত ব্লগেই এই জাতীয় কিছু পোস্ট চোখে পড়ে (ঠিক এই লেখাটির মত), যা যে কেউ চাইলে যেকোন সময়ে লিখতে পারে। 

মঙ্গলবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

সৌভাগ্যের বিচি (একটি ছোটগল্প)


জাপান সাগরের তীরে ছোট একটি গ্রাম। গ্রামের নাম ফুকুজুকু। এই গ্রামে বাস করে নাকাচুকু নামে একটি ছেলে আর তার মা। ছেলেটি খুব সৎ কিন্তু বড্ড অলস, কিছুই করতে চায় না। ছোটবেলাতেই বাবা মারা যাওয়ার পর নাকাচুকু’র মা ছেলেকে অতি আদরে বুকে আগলে রেখেছেন। নিজে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে বড় করে তুলছেন নাকাচুকুকে। কিন্তু দুঃখের বিষয় নাকাচুকু কোন কাজই করতে চায় না। মায়ের খুব দুঃখ হয় তার অবর্তমানে ছেলের কি হবে তাই ভেবে। এভাবে দিন যায়, একদিন নাকাচুকুর মা খুব অসুস্থ্য হয়ে পড়লেন। নিজের মৃত্যুর কথা চিন্তা করে মা নাকাচুকুকে কাছে ডাকলেন তারপর হাতে ছোট একটি শুকনো বিচি দিয়ে বললেন বাবা নাকাচুকু আমি মনে হয় আর বেশিদিন বাঁচব না। আমার মৃত্যুর পর তুমি এই বিচিটি গ্রামের শেষ প্রান্তে যে পাহাড় আছে তার শীর্ষে পুতে দেবে। এটি তোমার সৌভাগ্য বয়ে আনবে। 

গ্রাফিক্স ডিজাইনঃ ইলাস্ট্রেটরে স্টবেরি তৈরি

বেশকিছুদিন ধরে ইন্টারনেট থেকে কিছুটা দূরে ছিলাম, কিছুটা বলছি এই জন্যে যে নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া নেটে প্রবেশ করিনী।  বিশেষ করে গত ৭/৮ দিন আমার উপর দিয়ে একটা ঝড় বয়ে গেছে। পৃথিবীতে আমরা সবাই ক্ষনস্থায়ী, মৃত্যুই আমাদের মূল লক্ষ্য। কিন্তু তারপরেও এই মৃত্যুকে আমরা কখনই সহজভাবে মেনে নিতে পারিনা। পৃথিবীর এই শাশ্বত নিয়ম মানতে গত শুক্রবার ১০/০৫/২০১৩ ইং তারিখ আমার বাবা আমাদের ছেড়ে স্বগের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছেন। আমার আজকের পোস্টটি তাকেই উৎসর্গ করে শুরু করছি। . . .
31
প্রথমেই ইলাস্ট্রেটর ওপেন করে একটি পেজ নিন, ellipse tool ব্যবহার করে একটি বৃত্ত তৈরি করুন। এবং Direct Selection Tool ব্যবহার করে বৃত্তটিকে ডিমের মত আকৃতি প্রদান করুন এবং  Gradient Tool ব্যবহার করে ডিম্বাকৃতির শেপটিকে স্টবেরির ন্যায় রঙ্গিন করে নিনি।

শনিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৬

ইলাস্ট্রেটরে পাকা লেবু (মালটা) তৈরি

কেমন আছেন সবাই? অনেকদিন পর আজ লিখতে বসলাম। আসলে শত ব্যস্ততার মাঝেও ইলাস্ট্রেটর নিয়ে কিছুটা সময় পার করার মত একটা টপিক পেয়ে গেছিলাম। যদিও কাজটা মনের মত করতে পারিনী, আরও ভাল হওয়া উচিত ছিল তারপরেও পোস্টটা লিখে ফেলছি এই কারণে যে সময়ের খুব অভাব। এখন না লিখলে হয়তো কিছুদিন পর আর এটা নিয়ে কাজ করাও হবে না, ভুলেই যাবো। যা হোক চলুন তাহলে শুরু করা যাক। প্রথমে আমরা ফাইনাল ইমেজটি একবার দেখে নেবো। 
24
শুরুতে আমরা নিচের চিত্রের ন্যায় একটা ত্রিভূজ অংকন করব। এটা আমি পেন টুল ব্যবহার করে করেছি, আপনারা চাইলে অন্য যেকোনভাবেও তৈরি করতে পারেন। এরপর এটাতে কালার দিন, আমি এখানে কমলা রঙ ব্যবহার করেছি।

গুগল ক্রোমের লগো ডিজাইন

জানি ইলাস্ট্রেটরে যাদের সত্যিকারের আগ্রহ আছে তারা অবশ্যই আমার এই পোস্টে একটা ক্লিক করেছেন, সেজন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এই পোস্টটি যখন লিখছি তখন মনের ভিতরটা দুটো চাপা ভারী হয়ে আছে। একটা ব্যক্তিগত আর একটা সাভারের ঐ ভাই-বোন গুলোর জন্য। ব্যক্তিগতটা ব্যক্তিগতই থাকুক, আসুন সাভারের ঐ ভাই-বোন গুলোর জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে একবার প্রার্থনা করি যেন মৃতের আত্মারা শান্তি পায় আর যারা আহত তারা দ্রুত নিরাম লাভ করে।
তো চলুন এবার শুরু করা যাক। প্রথমে ইলাস্ট্রেটর ওপেন করুন, Ellipse দিয়ে  400×400 সাইজের একটি বৃত্ত আঁকুন যার Fill কালার সবুজ এবং Stroke কালার None থাকবে। এবার আরো একটি বৃত্ত আকুন 140×140 সাইজের এবং এটির Fill ও Stroke কালার যথাক্রমে সাদা এবং নীল। দ্বিতীয় বৃত্তটির Stroke ২০ করে দিন। নিচের চিত্রটি লক্ষ্য করুন।
14-300x212

ইলাস্ট্রেটরে উইন্ডোজ সেভেনের থ্রি-ডি লোগো ডিজাইন

এ্যাডবি ইলাস্ট্রেটর ব্যবহার করে খুব সহজেই উইন্ডোজ সেভেনের লোগো তৈরি করা যায়। কাজটা একেবারেই সহজ এবং অত্যন্ত সুন্দর। নিজে নিজে উইন্ডোজ সেভেনের লোগো তৈরি করার পর লাগেও খুব ভাল । আমি এখানে এ্যাডোবি ইলাস্ট্রেটর এর CS 11 ভার্শন ব্যবহার করেছি। চেষ্টা করেছি পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ এবং সাথে চিত্র দিতে। আমার বিশ্বাস একটু চেষ্টা করলে যে কেউ এটা করতে পারবে। তো ঠিক আছে কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করা যাক। প্রথমেই Adobe Illustrator ওপেন করে A4 সাইজের একটি আর্টবোর্ড (পেজ) খুলুন। এবার Rectangle Tool এ ক্লিক করে একটি বর্গক্ষেত্র অঙ্কন করুন যার ফিল কালার যেকোন একটা এবং স্টোক কালার None করে দিন। সঠিকভাবে বর্গক্ষেত্র আঁকার জন্য কী-বোর্ডের Shift কী চেপে রেখে মাউস পয়েন্টার ডানে-নিচে টানুন। তাহলে নিচের চিত্রের ন্যায় বর্গক্ষেত্র অঙ্কিত হবে। . . .
1 এবার বর্গক্ষেত্রটিকে ডিসিলেক্ট করে আবারো Rectangular Tool এ ক্লিক করে আগের আঁকা বর্গক্ষেত্রটির পাশে একটি রেখার ন্যায় আয়াতক্ষেত্র অঙ্কন করুন । সিলেক্ট করা অবস্থায় নিচের চিত্রের ন্যায় দেখাবে এবং খেয়াল রাখতে হবে এটি যেন আগের অঙ্কিত বর্গক্ষেত্রটির চেয়ে সামান লম্বা হয়, নিচের চিত্রের ন্যায়।